বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম: কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের সুখবর দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কওমি মাদরাসাগুলোর জন্য একটি কারিকুলাম প্রণয়নে কমিশন পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিতে ধর্মমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি গেজেট জারি করে কমিশন গঠন করে দিয়েছি। প্রয়োজনে সময় বাড়িয়ে এবং আরো সদস্য অন্তর্ভুক্ত করে কমিশনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব এবং ধর্মমন্ত্রীকে বলছি, এ ব্যাপারে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনিস্টিটিউশন বাংলাদেশ-এর মিলনায়তনে এক উলেমা সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। আলেম-উলেমা, মাশায়েখদের সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল উলেমা ‘ইসলামের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সনদ প্রদানে একটি কমিশন গঠন করে দিয়েছি। কমিশন প্রণীত শিক্ষা কারিকুলামের ভিত্তিতে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সনদপত্র দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক, কওমি মাদরাসা পাঁচ ভাগে বিভক্ত হওয়ায় তারা এ বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছতে পারছেন না। আমি মনে করি, তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এখনি সময়। এ সময়েই ধর্মের ওপর বড় আঘাত এসেছে। তিনি বলেন, সবাই মিলে একটি শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন করাই হবে সবচেয়ে ভালো কাজ। তবে এ বিষয়ে যারা মতৈক্যে পৌঁছতে চান, আমি তাদের বলবো, এটি গ্রহণ করুন। দেশে আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা প্রদান করবে এবং শিক্ষা সনদপত্র দেবে। তিনি বলেন, যারা এ বিশ্বদ্যিালয়ে লেখাপড়া করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবে, তারা দেশে ও বিদেশে চাকরি করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে চাই। যারা এটি চান, তাদের মতৈক্যে পৌঁছতে হবে। তাহলে আমরা এটির বাস্তবয়ন কাজ শুরু করতে পারবো। তিনি বলেন, এরপর আমরা আরবি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট দিতে সক্ষম হবো। তবে সার্টিফিকেট দেয়ার জন্য ন্যূনতম কারিকুলাম প্রয়োজন। তা না হলে কিসের ভিত্তিতে সার্টিফিকেট দেয়া হবে। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সময়ে এটি খুবই প্রয়োজন, যাতে সরকার সার্টিফিকেট প্রদানে দ্রুত কাজ শুরু করতে পারে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল উলেমার সভাপতি মওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ। অনুষ্ঠানে রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান স্বামী ধ্রুবেশানন্দ মহারাজ, আর্চ বিশপ প্যাট্রিক ডি রোজারিও, বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সঙ্গের শুদ্ধানন্দ মহাথেরো এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে মানব কল্যাণের জন্য শান্তির ফতোয়া প্রদান উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া গ্রান্ড ইমাম আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসুদের তত্ত্বাবধানে এক লাখ মুফতি ও আলেম উলেমা এতে স্বাক্ষর করেন।